প্রোগ্রামিং পরিসংখ্যান অমৃতসমান, গিটহাব ভনে শুনে পূণ্যবান

Spread the love

গত কিছুদিন ধরে সদ্য পাশ করা প্রোগ্রামাররা চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গিয়ে এই প্রশ্নটা নিশ্চয়ই শুনেছে – তোমার গিটহাবের একাউন্ট কী? তো, এটা কেবল বাংলাদেশে নয়। বিশ্বব্যাপী সফটওয়্যার বিনির্মাণ এখন ভিন্নমাত্রায় পৌছে গেছে। বলা চলে এখন এটি কমিউনিটি ওয়ার্ক। এ কারণে গিটহাব বা স্টেকওভারফ্লো’র মতো প্ল্যাটফর্মের গুরুত্ব ও কার্যকারিতা বেড়েই চলেছে। ২০১৮ সালের ১ অক্টোবর থেকে এ বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত গিটহাবে নতুন যুক্ত হয়েছে মাত্র ১ কোটি প্রোগ্রামার।!!! মানে ৪ কোটির মধ্যে ১ কোটিই নতুন! আগামীতেও এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমার ধারণা।

বেশি কিছুদিন হলো গিটহাবের ২০১৯ বার্ষিক রিপোর্ট প্রকাশিত হয়েছে। আমি একটু বেশি উত্তেজনা নিয়ে এবার অপেক্ষা করেছি। কারণ ছিল। ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে ৭৫০ কোটি ডলারে গিটহাবকে কিনে নেয় মাইক্রোসফট। মাইক্রোসফটের মতো ক্লোজ সিস্টেমের লোকজন যখন গিটহাবের মতো ওপেন সোর্স প্ল্যাটফর্ম কেনে তখন অনেকেই সন্দেহের চোখে দেখবে-এটাই স্বাভাবিক। এই একুইজিশনের সময় থেকে অনেকেই হতাশাও প্রকাশ করেছেন। ফলে ধারণা করা হয়েছিল গিটহাবের জনপ্রিয়তা কমে যাবে। কিন্তু ব্যাপারটা কি তাই? এখন তো দেখা যাচ্ছে বার্ষিক বৃদ্ধিতে গেল বছরই সেরা। দ্বিতীয় কারণ হলো চতুর্থ শিল্পবিপ্লব। এর ফলে আমাদের চারদিকে অনেক পরিবর্তন ঘটছে। বিশেষ করে কর্মবাজারে। কর্মবাজারের কেন্দ্র ক্রমাগত প্রোগ্রামিং-কম্পিউটার হার্ডওয়্যার-আইওটি এসবের দিকে সরে যাচ্ছে। ফলে বিশ্বব্যাপী প্রোগ্রামের চাহিদা বাড়ছে। সম্প্রতি একটা খবরে পড়েছি এই মুহূর্তে ৩৮ লক্ষ প্রোগ্রামারের সংকট আছে বিশ্বজুড়ে। এর আগে এ সংখ্যা ছিল ১০ লক্ষ।  আমি তাই গত কয়েকদিন ধরে গিটহাবের বার্ষিক রিপোর্ট অক্টোভার্স পড়ছি।

এক নজরে

এ বছর নতুন এক কোটিসহ মোট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৪ কোটি পার হয়েছে। নতুন ৪ কোটি ৪০ লক্ষ রিপোজিটরি সৃষ্টি হয়েছে। ৮ কোটি ৭০ লক্ষ পুল রিকোয়েস্ট হয়েছে যা গতবছরের চেয়ে ২৮% বেশি এবং ২ কোটি ইস্যুর সমাধান হয়েছে। নতুন প্রোগ্রামারদের বেশিরভাগ এখনও হাইস্কুলে (দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত)। এক কোটি নতুনের মধ্যে ৭৬ লক্ষই এসেছে সেখান থেকে।  ফরচুন ৫০ কোম্পানির ৩৫টিকেই দেখা গেছে গিটহাব এন্টারপ্রাইজে কাজ করতে। বিশ্বব্যাপী মুক্ত সফওয়্যারের কদর ও ডেভেলপার দুই বাড়ছে। আমেরিকার বাইরে চিন, ভারত ও জামার্নীতে মুক্ত সফটওয়্যারের অগ্রগতি ভাল। নতুনদের মধ্যে নাইজেরিয়ার এগিয়ে আছে সবচেয়ে বেশি। গিটহাবে চিন গতবছরের তুলনায় এ বছরে ৪৮% বেশি প্রজেক্ট শুরু করেছে।

প্রোগ্রামিং ভাষা

এবছর ডেভেলপাররা ৩৭০টি ভাষায় ‘বাত-চিৎ’ করেছে। এর মধ্যে সি শার্প ও শেল একত্রে এগিয়েছে অনেক। আর ইতিহাসে এই প্রথমবার পাইথন জনপ্রিয়তায় জাভাবে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। নতুনরা যারা কোন ভাষা শিখবো বলে ভাবছে তারা এই চার্টটার দিকে নজর রাখতে পারে।

নুতনগুলোর মধ্যে ডার্টের উত্থাণ লক্ষনীয়। সেই সঙ্গে পারিসাংখ্যিক কাজ-কারবারে লাগে এমন কটলিন, রাস্ট কিংবা টাইপস্ক্রিপ্টের জনপ্রিয়তাও দ্রুত বাড়ছে। অথচ ৩০ বছরের পুরানো ভাষাও নতুন এপ্লিকেশন খুঁজে পাচ্ছে।  নতুন নতুন ফ্রেমওয়ার্কও লক্ষ লক্ষ ব্যবহারকারী খুঁজে নিচ্ছে।

গিটহাবের দিকে নজর রাখলে আগামীদিনের পরিবর্তন ও ট্রেন্ড সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবে। বিশ্বের সামনের কাতারের দেশগুলো তাদের স্কুল-কলেজ (মানে বিশ্ববিদ্যালয়) গুলোর শিক্ষকদের এখন এসব ফোরামে যুক্ত হওয়ায় উৎসাহ দিচ্ছে। এ বছর নতুন ৩১ হাজর শিক্ষক গিটহাবে যুক্ত হয়েছেন। তার মানে হলো যারা এগিয়ে থাকবেন তারা এখানেই থাকেন।

ব্যাপক খোঁজাখুঁজি করেও আমি কোন পরিসংখ্যানে বাংলাদেশকে খুঁজে পাইনি (আমার ভুলও হতে পারে)। তার মানে হলো বিশ্ব প্রোগ্রামিং ম্যাপে আমরা খুব এটা জুতের জায়গাতে নেই। চাপাবজির ম্যাপে অবশ্য ভালই থাকার কথা।

যাদের আগ্রহ আছে তারা মুল রিপোর্টটা পড়ে নিতে পারেন।

[গিটহাব সংক্রান্ত একটি স্পেশাল আয়োজন করছে বিডিওএসএন। হবে সহসা]

2 Replies to “প্রোগ্রামিং পরিসংখ্যান অমৃতসমান, গিটহাব ভনে শুনে পূণ্যবান”

  1. আপনার একটি ভালো লেখা শুধুমাত্র অসংখ্য বানান ভুলের কারণে অপাঠ্য হয়ে ওঠে। আশা করি এই বিষয়টি ভবিষ্যতে খেয়াল রাখবেন৷

Leave a Reply