স্ক্র্যাচের প্রথম ব্যাচ শেষ হলো

Spread the love

ওরা বিভিন্ন স্কুলে পড়ে। সবচেয়ে ছোট জন তৃতীয় শ্রেণীতে আর সবচেয়ে বড় জন অস্টম শ্রেণীতে। তবে, ওরা গত ১০ টা ক্লাশ করেছে স্ক্র্যাচ প্রোগ্রামিং-এর ওপর। স্ক্র্যাচ একটা প্রোগ্রামিং প্ল্যাটফর্ম যা তৈরি করা হয়েছে সিনটেক্স এররকে জয় করার জন্য।

প্রোগ্রামিং-এর ব্যাপারটা সার্বজনীন হয়ে যাচ্ছে। স্টিভ জবসের ভাষ্য হল – সব শিশুরই প্রোগ্রামিং শেখা উচিৎ। সেটা এজন্য নয় যে, তারা সবাই প্রোগ্রামার হবে। বরং এর মাধ্যমে তারা শিখবে কীভাবে একটা সমস্যার সমাধান করা যায়।
গেল বছর থেকে বিডিওএসএন শিশুদের প্রোগ্রামিং-এ আগ্রহী করার জন্য স্ক্র্যাচ ভিত্তিক নানান আযোজন শুরু করে। এর মধ্যে আওয়ার অব কোডকে ছড়িয়ে দেওয়া, ভলান্টিয়ারদের ল্যাপটপ নিয়ে বের হয়ে মাঠে-ঘাটে-হাটে প্রোগ্রামিং দেখানো এবং স্ক্যাচ নিয়ে একাধিক কর্মশালা করা হয়েছে। সে সব জায়গায় আমরা জেনেছি, শিশুদের জন্য একটু লম্বা কোর্সের আয়োজন করতে পারলে ভাল হয়। তারই ফলাফল হলো এই ১০ দিনের কোর্সটা। বিডিওএসএনের আয়োজনে ম্যাসল্যাবে এই কোর্সটি সম্পন্ন হয়েছে। আমাদের ১০টি ল্যাপটপ আর ২ জন তাদের ল্যাপটপ সঙ্গে এনে এই কোর্সটা মেষ করেছে গতকাল, ১৮ই মে। ওদেরকে প্যাকম্যান গেম বানানোর একটা ফাইনাল এসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছে। গতকালের ক্লাসে আমি অনেকক্ষণ বসে ছিলাম। দেখলাম শিশুরা খুব সহজেই ভেক্টরের ব্যাপারটা বুঝে নিয়েছে। মানে সেটা দিয়ে কীভাবে কাজ করতে হবে।

এ ক’দিনে ওরা আরও একটা কাজ শিখেছে। সেটি হরো ভাল প্রোগ্রামার হতে হলে বা প্রোগ্রামিং শিখতে ঞলে অন্যদের করা প্রজেক্টের ভিতরে ঢুকতে হয়। আগামী ২ জুন ওদের সার্টিফিকেট দেওয়া হবে। এছাড়া ওরা সবাই নিজেরা একটা করে প্রজেক্ট বানাবে যেটির শো’ও হবে একদিন।

এই কোর্স করাতে গিয়ে আমরা দেখেছি শিশুদের একবার আগ্রহী করা গেলে তারা নিজেরাই শেখাতে আগ্রহী হযে উঠে। সপ্তাহের শুক্রবার বও মঙ্গলবার ওদের ক্লাস থাকতো দেড়ঘন্টা করে। তারপর ওদের একটা কাজ দেওয়া হোত যা ওরা বাসাতে করেই আমাদের স্টুডিওতে আপলোড দিয়ে দিতো। এতে, আমাদের ফ্রাসিলিটেটররাও তাদের সঙ্গে সঙ্গে যেতে পেরেছে।

এই কোর্সে বিদুষীও অংশ নিয়েছে। আমি ওর উত্তেজনা টের পেয়েছি। হোমওয়ার্ক করা, ইউটিউবে স্ক্র্যাচের বিভিন্ন নিজিষ দেখা এগুলো খুবই মনোযোগ দিয়ে ও দেখেছে। স্ক্র্যাচের বিভিন্ন প্রজেক্ট খুটিয়ে খুটিয়ে দেখা, সেগুলো সামান্য এদিক ওদিক করতে পারা নিয়েও ওর অনেক আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
অন্যদের মধ্যে আমাদের মোহাম্মদ গাজী তৌহিদুর রহমানের বড় ছেলেও ছিল্ও ক্লাস এইটে পড়ে। বাবার ল্যাপটপে ক’দিন কাজ করার পর তৌহিদ ওকে ল্যাপটপ কিনে দিয়েছে। তৌহিদের ভাষ্য হলো – ও অনেক আগ্রহ নিয়ে প্রোগ্রামিং ব্যাপারটা বোঝার চেষ্টা করছে। এতেই আমি খুশি।

আমাদের ফ্যাসিলিটেটররা, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষক শাকিলা মাহজাবীনের নেতৃত্বে অনেক কষ্ট করেছে। তাদের ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।
অভিভাবাকরা তাদের সন্তানদের প্রতিদিন ক্লাসে নিয়ে আসতেন, ক্লাসের সামনে বসে থাকতেন। তাদের অনেক ধন্যবাদ।
আগামীতে এই কোর্সটা কন্টিনিউ করার পাশাপাশি একটু সামনের দিকের কোর্স এবং অনেকগুলো কর্মশালার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দেখা যাক আমরা কতদূর যেতেপারি।
আল্লাহ ভরসা।

One Reply to “স্ক্র্যাচের প্রথম ব্যাচ শেষ হলো”

Leave a Reply