বিদুষী’জ ডে আউট

Spread the love

আজ ১১ মে, ২০১৮ সকালে মিরপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজে গিয়েছি, আমি আর বিদুষী। আজ বিদুষীর ডে আউট। ওখানে তিনদিনের বিজ্ঞান, ব্যবসা, বিতর্ক, গল্প লেখা, দাবা এরকম ২৮টা ইভেন্টের একটা কার্নিভাল হচ্ছে, প্রথম আলো যার সহযোগী। আজ ছিল দ্বিতীয় দিন। প্রজেক্ট দেখেছি। কিছু প্রজেক্ট যথারীতি শোলা দিয়ে বানানো কিছু হাবিজাবি মডেল, সায়েন্স নাই। এক চোট ছেরে দেখলাম একটা আর্থকোয়েক সেন্সর বানানোর চেষ্টা করেছে। তবে, কয়েকজনকে দেখলাম সত্যি সত্যি কিছু বানানোর চেষ্টা করেছে। এর মধ্যে একটি প্রজেক্ট দেকলাম যারা একটি হাউড্রোলিক আর্মকে মোবাইলদিয়ে কন্ট্রোল করতে চেষ্টা করেছে। বিদুষী ভিডিও করেছে।
একটা রুমে দেখলাম দাবা প্রতিযোগিতা হচ্ছে। দাড়িয়ে দাড়িয়ে দেখলাম। মনে পড়লো আমাদের একটা দাবা অলিম্পিয়াড করার কথা। এংকর পাচ্ছি না বলে করা হচ্ছে না।
স্কুলের বাবুর্চির বানানো চিকেন কাটলেট খেয়েছি এবং প্রিন্সিপালের হাত থেকে ফুল আর উপহার নিয়ে এসেছি। স্কুল পাঠাগারের জন্য শরবত আর গ্রোথ দিয়ে এসেছি।

স্কুলটি খুবই চমৎকার করে সাজানো।
ঢোকার মুখে জাতির পিতার একটি বড় ছবি আছে, পাশে তার জীবনী।
দোতলার লবিটি সাজানো হয়েছে ৫২ থেকে ৭১, আমাদের স্বাধীনতা আন্দোলনের স্মৃতি দিয়ে। ছবি আছে, সে সময়ের পোস্টার গুলোর প্রতিলিপি আছে। ওখানে গেলেই একটা আলাদা অনুভূতি হয়। সিড়ির প্রতিটি ধাপেই কিছু না কিছু লেখা আছে।
তিনতলার লবিটি সাজানো হয়েছে বাংলাদেশর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নানান ছবি ও বর্ণনা দিয়ে। সাজেক ভ্যালি বা রাঙ্গামাটি বা সুন্দরবন। জ্যান্তই মনে হয়। দোতলায় ওঠার সময়ে খেযাল করলাম অবাধ্য স্টুডেন্টদের জন্য একটা জায়গা আলাদা করা আছে। সম্ভবত গ্যান্জাম করলে এখানে এসে বসেথাকতে হয় অথবা কোয়ার্টার মাস্টার খেতে হয়। কে জানে। আমি জানতে চাইনি।
ফিজিক্স ল্যাবের দরজার পাশে সত্যেন বসু দেখলাম একটা চেয়ারে বসে আছেন। জীববিজ্ঞান ল্যাবের সামনে জগদীশ বুসকে দেখলাম চারদিকে খেয়াল রাখছেন। একটু দাড়ালাম মাকুসুদুল আলম স্যারের সামনে। তাঁকে জানালাম তাঁর স্মৃতিতে গড়া আমাদের ম্যাসল্যাব খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। মনে হল একটু হাসলেন।
শ্রেণীকক্ষগুলো চমৎকার করে সাজানো। যে কোনো রুমে ঢুকলেই মনটা ফুরফুরে হয়ে যায়। গোছানো, সুন্দর। সাজানোর জন্য যে সমস্ত উপকরণ ব্যবহার করা হয়েছে সেগুলোর কোনটিই দামী কিছু নয়। রঙ্গিন কাগজ কেটে কেটে করা হয়েছে। দেওয়াল জুড়ে নানা কথামালা এবং একটিভিটির নমুনা। জানলাম ছোট ক্লাসেও প্রচুর প্রজেক্ট করতে হয়। স্কুলের সব শিক্ষার্থীরই আইডিয়া লেখার খাতা আছে। সেগুলোর নিয়মিত যাচাই বাছাই হয়। প্রত্যেক শিক্ষার্থীকে একটি বিষয়ে অনর্গল কথা বলতে পারতে হয়! এমন নানা কিছু।

ওখানে থেকে বের হয়ে ভিকারুন্নিসা নুন স্কুলে যেতে যেতে মনে হল – একটা স্কুলকে মানসম্মত একটি স্বপ্নের স্কুলে পরিণত করতে আসলে টাকা পয়সা বেশি লাগে না। লাগে আসলে দূরদৃষ্টি নেতৃত্ব, সদিচ্ছা ও আন্তরিকতা।

 

Leave a Reply