উদ্যোগে অগ্রগামী, উচ্ছ্বাসে একত্রে

Spread the love

বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ২২ লক্ষ ছেলে-মেয়ে কর্মবাজারে আসে। এদের একটা বড় অংশ বিদেশে চলে যায়, খুবই কম সংখ্যকের বিসিএস হয়, অনেকের বেসরকারি চাকরি হয়। হরেদরে শেষ পর্যন্ত ১০-১২ লাখের একটা গতি হয়। কিন্তু প্রতিবছরই ১০ লক্ষ লোকের কোন গতি হয় না। এটি নিয়ে যখন আমরা ভাবতে শুরু করি, তখন অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতা দেখতে যাই। চিনের সঙ্গে মিল পাওয়া গেল। চিনে ১৯৭৭-৭৮ সালে বেবি বুম হলো। তখন তারা হিসাব করে দেখলো ১৯৯৯ সাল থেকে এই বিরাট সংখ্যক ছেলেমেয়েরা কর্মবাজারে এসে পড়বে। তাদেরকে কেমনে কাজ দেওয়া যাবে?
চিন তখন তাদের উদ্যোক্তা সিস্টেমকে ঠিক করেছে। এখন চিনে প্রতিদিন ৫ জন মিলিওনিয়ারের জন্ম হয়!!!
কিন্তু, কাজ করতে গিয়ে আমরা টের পেলাম আমাদের দেশে ব্যবসা উদ্যোগকে মোটেই ভাল চোখে দেখা হয় না। যতো আজেবাজে কাজ আছে তার সঙ্গে বাণিজ্য কথাটা জুড়ে দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানের কর্মীর বিয়ের বাজার ভাল, কিন্তু উদ্যোক্তাকে কেউ মেয়ে বিয়ে দিতে চায় না।
এমন একটা ব্যকড্রপে ২০১১ সালের গণিত অলিম্পিয়াড থেকে আমরা উদ্যোগ আর উদ্যোক্তা নিয়ে কাজ শুরু করি। সেবার গণিত অলিম্পিয়াডের প্রতি পর্বে হাজির হন একজন উদ্যোক্তা। তিনি তাঁর অভিজ্ঞতা শোনান সবাইকে।
পরে ২০১১ সালের ৭ এপ্রিল প্রথম আলো পত্রিকার স্বপ্ন নিয়ে পাতায় আমি একটা নিবন্ধ লিখি। অন্যরকমের মাহমুদুল হাসান সোহাগ আর স্বপ্ন নিয়ে’র সেই সময়কার সম্পাদক ফিরোজ জামান চৌধুরীর কাটাকাটিতে সেটির শিরোনাম হয় “চাঁকরি খুঁজব না, চাকরি দেব”। তার ৬ দিন পর ১৩ এপ্রিল আমি ফেসবুকে একটি গ্রুপ খুলি, একই নামে। উদ্দেশ্য – বাংলাদেশে ওপেন সোর্স নেটওয়ার্ক থেকে এন্ট্রারপ্রিনিয়রশীপ নিয়ে আলাপ আলোচনা করা। সেটি ধীরে ধীরে বিকশিত হয়। বছর খানেক পড়ে আমরা ফেসবুক থেকে বের হয়ে নানান আয়োজন করতে থাকি। চালু হয় সেমিনার, ওয়ার্কশপ, আড্ডা। চালু হয় উদ্যোক্তা পাঠচক্র। যারা সফল হচ্ছে তাদেরকে দেওয়া হয় উদ্যোক্তা সম্মাননা ও নবীন উদ্যোক্তা স্মারক। উদ্যোক্তা হাটের মাধ্যমে তাদের পন্য ও সেবার প্রদর্শণীর ব্যবস্থা করা হয়।
এখন আমাদের সদস্য সংখ্যা ৮০ হাজারের বেশি। বিডিওএসএনের অফিসে নিয়মিত এর কার্যক্রম হয়। এডমিন আর মডারেটর প্যানেল সমৃদ্ধ হয়েছে।
তবে, কাজের তো শেষ নেই। আমি প্রায়শ ভাবতাম আমাদের উদ্যোক্তাদের জন্য আর একটু ভিন্নধর্মী কিছু আয়োজন করা যায় কিনা। যেমন উদ্যোক্তা সামিট। এখানে আমাদের তরুণ ও নবীন উদ্যোক্তারা যেমন থাকবেন তেমনি সিনিয়র ও পোড় খাওয়া উদ্যোক্তারাও থাকবেন। তাদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়া হবে। থাকবে ইকো সিস্টেম নিয়ে যারা কাজ করেন, তাদের প্রতিনিধিত্ব।
সেই থেকে আমাদের নিজেদের মধ্যে আলোচনা। আর তার ফসল “আইপিডিসি উদ্যোক্তা সামিট ২০১৮”।
আগামী ৭-৮ ডিসেম্বর ঢাকায় এশিয়া প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এটি অনুষ্ঠিত হবে। এতে থাকছে ১০টি সেশন, ৪টি কর্মশালা ও একটি ইনভেস্টর পিচিং

সেখানে যে সব উদ্যোগের বয়স তিন বছরের বেশি, গ্রোথ স্টেজে যারা কমপক্ষে ২৫, ৫০ লক্ষ বা তার চেয়ে বেশি টাকার জন্য বড় হতে পারছে না তাদের থেকে বাছাই কয়েকজনকে সুযোগ দেওয়া হবে পিচিং-এর। বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে মেলবন্ধনের ব্যবস্থা করা হবে।
থাকবে প্রোডাক্ট শো-কেসিংএর সুযোগ। এদের মধ্যে যারা একটু অগ্রগামী তাদের জন্য ফেব্রিকেটেড স্টল। আর যারা একেবারে নতুন তাদের জন্য টেবিল স্টল। থাকবে সমঝোতা বা চুক্তি স্বাক্ষরের ব্যবস্থা।
সেশন ও কর্মশালাগুলোতে হাজির থাকবেন বরেণ্য শিল্পপতি, সফল উদ্যোক্তা, ভেঞ্চার বিনিয়োগকারী, ব্যাংকার, শিক্ষাবিদসহ বরেণ্য ব্যক্তিবর্গ
৭ ডিসেম্বর সকালে সেটির উদ্বোধন করবেন আমাদের অভিভাবক, জাতীয় অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। সঙ্গে থাকবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম, একসেস টু ইনফরমেশনের প্রকল্প পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, আইপিডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোমিনুল ইসলাম। সব মিলিয়ে থাকবেন প্রায় ৫০ জন বক্তা ও প্যানেলিস্ট। কয়েকটি কর্মশালাও হবে যার উদ্দেশ্য হবে হাতে কলমে শেখা। থাকবে গ্রোথ হ্যাকারদের কনফারেন্স।
এখন এ নিয়ে চলছে নানা প্রস্তুতি।

উন্নয়ন করা হয়েছে একটি চমৎকার ওয়েবসাইটের
চাকরি খুঁজবনা, চাকরি দেব ও এশিযা প্যাসিফিক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ আয়োজনে এই সামিটের টাইটেল স্পন্সর আইপিডিসি। সঙ্গে আছে আরও অনেক প্রতিষ্ঠান।

উদ্যোক্তাদের  মিলনমেলায় সবার আমন্ত্রণ। যোগ দিতে কোন ফী লাগবে না। তবে, নিবন্ধন করতে হবে।

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version