লাইক এ ভার্জিন

Spread the love

এপল, মাইক্রোসফট, কোকাকোলা, বিএমডব্লিউ, টয়োটা কিংবা স্টান্ডার্ড চাটার্ড – এগুলো বলার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের মানসপটে একটি ছবি ফুটে উঠে যা দিয়ে ঐ ব্র্যান্ডকে চেনা যায়। কিন্তু যদি বলি ভার্জিন? তাহলে? কোনো একটা ছবি কি আমরা দেখি?
দেখি না। কারণ ভার্জিন বললে আপনি কোলা বলছেন নাকি এয়ারলাইন, ক্রেডিডকার্ড নাকি মিউজিক, হেলথ ক্লাব নাকি ফাউন্ডেশন বলছেন সেটা বোঝা মুশ্কিল। কারণ, বিশ্বের বড় ব্র্যান্ডের মধ্যে সম্ভবতভার্জিন গ্রুপের বিভিন্নমুখী ব্যবসা রয়েছে যেগুলো পরস্পর অসম্পর্কিত।
ভার্জিনের স্বপ্নদ্রস্টা এবং বাস্তবায়ক রিচার্ড ব্রনসনের নাম আমরা অনেকেই হয়তো শুনেছি। আমাদের ভাষায় এই উড়াধুরা ব্রিটিশ উদ্যোক্তাকে বলা যায় একেবারে ভিন্ন রকমের উদাহরণ। প্রচলিত কোন ডিগ্রী তার নেওয়া হয়নি।
ডাইলেক্সিয়া ছিল ছোটবেলায়। ফলে পড়াশোনায় কখনো ভাল করেননি। ১৬ বছরের পর আর প্রচলিত পড়া পড়েননি। শুরু করেছেন ব্যবসা। চালু করেন স্টুডেন্ট নামে একটি পত্রিকা। তারপর একটি মেইল-অর্ডার রেকর্ডের ব্যবসা। সেটিই বড় হয়ে হল ভার্জিন মেগাস্টোর। ১৯৮০র দিকে ভার্জিন গ্রুপ দ্রুত বিকশিত হতে থাকে। নিজের ব্যবসা ছাড়াও ব্রনসন অন্য ব্যবসায়েও বিনিয়োগ করতে শুরু করেন এবং এখন এই গ্রুপে মাত্র ৪০০ প্রতিষ্ঠান রয়েছে। ১৯৮৪ সালে চালু করেন ভার্জিন এয়ারলাইন্স, ১৯৯৯ সালে ভার্জিন মোবাইল ও ভার্জিন অস্ট্রেলিয়া। মিউজিক, কোলা, হেলথ ক্লাব – কী নয়? সাময়িকী ফোর্বসের হিসাব মতে ২০১২ সালে তার ব্যক্তিগত সম্পদ ছিল মাত্র ৪৬০ কোটি ডলার। আছে একটি ব্যক্তিগত দ্বীপ ক্যারেবিয়ায়, আছে ভার্জিন আইল্যান্ড!!!

তার কথা ছোট- My interest in life comes from setting myself huge, apparently unachievable challenges and trying to rise above them … from the perspective of wanting to live life to the full, I felt that I had to attempt it.

 

অনারারি ডক্টরেট থেকে শুরু করে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের নাইট উপাধি পেয়েছেন স্যার রিচার্ড। তাঁর ব্যবসার ধরণ অন্যদের থেকে আলাদা। আর তাঁর ৪০-৫০ বছরের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি নিয়মিত লিখেই যাচ্ছেন। ১৯৯৮ সালে তার আত্মজীবনি লুজিং মাই ভার্জিনিটি বেস্ট সেলারের মর্যাদা পায়। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কাজে তাঁর আগ্রহের কোন কমতি নাই।
তাঁর সাফল্যের একটি বড় কারণ সম্ভবত ফান, মজা করার সাহস।

রিচার্ডের একটি প্রতিষ্ঠান আছে ফরমুলা ওয়ান রেসিং-এ। এয়ার এশিয়া গ্রুপেরও একটা সেরকম ফরমুলা ওয়ান ক্লাব আছে। এয়ার এশিয়া গ্রুপের সিইও ও রিচার্ডের বন্ধু টনি ফার্নান্ডের সঙ্গে তিনি বাজি ধরলেন। আবু ধাবি গ্রাঁপ্রিতে যার ক্লাব হারবে সে অন্যজনের এয়ারলাইনের একটি ফ্লাইটে মহিলা ক্রু সেজে কাজ করবেন। বাজিতে হেরে রিচার্ড ঠিকই ঠোটে লিপস্টিক লাগিয়ে, হাই হিল পড়ে, ফ্লাইট এটেনডেন্টের স্কার্ট পড়ে এয়ার এশিয়ার একটি ফ্লাইটে কাজ করেছেন! এই স্পেশাল চ্যারিটি ফ্লাইটিটি অস্ট্রেলিয়ার পার্থ থেকে কুয়ালালামপুর উড়ে যায়।
ফ্লাইট শেষে ব্রনসন বলেন তিনি ব্যাপারটি কেবল উপভোগ করেছেন তা নয়, তিনি আরো ভালভাবে উপলব্ধি করেছেন কেমন করে তাঁর এয়ারলাইনের ক্রুরা কষ্ট করে তার ব্যবসাকে টিকিয়ে রেখেছে। ঐ ফ্লাইটের প্রতিটি টিকেটের জন্য এয়ার এশিয়া অস্ট্রেলিয়ার একটি দাতব্য প্রতিষ্ঠানকে ১০০ ডলার দান করে। যা থেকে মোট দুই লক্ষ ডলার পেয়েছে ঐ প্রতিষ্ঠানটি।
এবারের দক্ষিণ আফ্রিকা আসা-যাওয়ার পথে তাঁর দুইটি বই কিনেছি। একটা হল লাইক এ ভার্জিন। এটি তার ব্যবসা সংক্রান্ত অভিজ্ঞতার বিবরনী এবং সমালোচক-ভক্তদের প্রশ্নের জবাব। এর মধ্যে একটি প্রশ্ন তিনি পেয়েছেন পোস্টকার্ডে। ছোট ছোট অসংখ্য নিবন্ধ রয়েছে বইটিতে। ব্যবসা শুরু থেকে টিম বিল্ডিং, পিচিং থেকে ইনভেস্টমেন্ট, কাস্টোমার সার্ভিস থেকে ইনহাউস ট্রেনিং – কী নেই।

আমি পড়তে শুরু করেছি। যাদের সুযোগ আছে তারা পড়তে পারেন।
তবে, এক নি:শ্বাসে পড়া যাবে না। পড়তে হবে রয়ে সয়ে।

বই পড়ার জয় হোক।

6 Replies to “লাইক এ ভার্জিন”

    1. এটি সরাসরি অনুবাদ করবো না। কারণ এখানে অনেক নিবন্ধ এং সবগুলো জয়েন্ট না। তবে, বাছাই করা ১০টা নিবন্ধের একটা সংকলন করতে পারি।
      আগে একবার পড়ে নেই।

  1. Dear Mr. Munir Hasan,

    Heartiest greetings to you to lead the dreamer to make it happen since a long.

    Is there any soft copy of this book? or is there any option to collect a copy of the book ‘cuz the original copy seems costly to me!

    Regards

    Ferdous

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version