জীবনের ডাক শোনো

Spread the love

বোর্ডে এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল টাঙ্গিয়ে দেওয়া হয়েছে। ৫ম হয়েছে যে শিক্ষার্থী তার নাম লেখা হয়েছে – নাহিদ মাহবুব। খুঁজ নিয়ে সাংবাদিকরা হাজির হয়েছে তার বাসায়। কারণ নাম দেখে মনে হয়েছে নাহিদই এবার বোর্ডে মেয়েদের মধ্যে প্রথম! কিন্তু এ কি এযে দেখি নাহিদ নয়, নাভিদ, ছেলে!  আর নাভিদ ভাবে – হায়, হায়। রাতের বেলায় এমন কিছু কী হলো যা আমি জানি না। দ্রুত ছোটে ছোটঘরের দিকে!
হাসতে হাসতে আর হাসাতে হাসাতে জীবনের গল্প বলছিলেন নাভিদ মাহবুব – প্রকৌশলী থেকে মাল্টিন্যাশনালের সিইও হয়ে এখন তিনি ফুল টাইম কমেডিয়ান – মানুষকে আনন্দ দিতে ভালবাসেন।
গত ১৪ নভেম্বর বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তে বিডিওএসএনের নতুন আয়োজন বিডিওএসএন টকের প্রথম অনুষ্ঠানে কেবল কথা বলে শ’দেড়েক দর্শক-শ্রোতাকে মুগ্ধ করে রাখেন নাভিদ।
শুরু করেন নিজের এসএসসি পরীক্ষার কথা দিয়ে। আগের বছরে বোনের এসএসসিতে প্রথম হওয়া উপলক্ষে চাচা-চাচী তাতে রোমে বেড়াতে নিয়ে যায়। কাজে বিপুল বিক্রমে পড়ে-টড়ে নাভিদ যকন ১৩তম হল, তখন মনে কত আশা কিন্তু পুরুস্কার পাওয়া গেল একটা কলম!
এই ঘটনা থেকে নাভিদ জেনেছে – কথা দিলে কথা রাখা উচিৎ। না হলে যাকে কথা দেওয়া হয় সে মনে কষ্ট পায়।
বুয়েটে পড়ার সময় কিংবা আমেরিকাতে বড় বড় প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার সময় নাভিদ তাঁর জীবনের ডাের জন্য অপেক্ষা করেছে খুঁজে ফিরেছে তার জীবনের উদ্দেশ্য।

জীবনের তিন বৃত্ত, জীবিকা, ভালবাসা এবং ভাল পারা কে একত্রিত করার চেষ্টা ছিল দীর্ঘদিনের। কমেডিগুরুর তত্ত্বাবধানে কমেডিতে হাতে খড়ি হওয়ার পর এক প্রতিযোগিতায় অংশ নেন। সেখানে ১২৫জনের বেশি, সারা আমেরিকা থেকে আসা, কমেডিয়ানকে হারিয়ে হয়ে যান – সেরা কমেডিয়ান।
বিচারকরা তাঁর যোগ্যতা হিসাবে দেখেন – তার সত্য ভাষন, অন্যকে আঘাত না করা এবং অহেতুক অশালীন ভাষার ব্যবহার না করে হাস্যরসের সৃষ্টি ক্ষমতা।
মানুষকে আনন্দ দিতে গিয়ে টের পান এই তার জীবনের ডাক। হাস্যরসের মাধ্যমে কোন মেসেজ যদি দেওয়া যায়, তাহরে সেটি মানুষের একেবারে মরমে গিয়ে পৌছে। চলতে ফিরতে মানুষটি হয়তো সেটি নিয়ে হাসে, মনে মনে পুলকিত হয়। কিন্তু এক সময় উপলব্ধি করে তার শক্তি।
ঠিক এই কারণে মাল্টিন্যাশনালের সিইওগিরি ছেড়ে একজন মানুষকে আনন্দ দেওয়াটাকেই বেছে নিয়েছেন নিজের পেশা এবং নেশা হিসাবে। নিজের ভাললাগা, ভালবাসা এবং জীবিকার বৃত্তকে এক বৃত্তে পরিণত করেছেন।

চলতে ফিরতে অনেক অভিজ্ঞতা হয়, অনেকের কাছ থেকে এপ্রিসিয়েশন পাওয়া যায়। সবচেয়ে বড় কথা মানুষের সত্যিকারের ভালবাসাও মিলে।
দেড়ঞন্টার আলাপচারতায় নাভিদ তাই সকলকে বলেছে

জীবনের ডাক শোনো, তাতে সাড়া দাও।

সবার জীবন মঙ্গলময় হোক।

 

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version