মেয়েদের কোডই বেশি গ্রহণযোগ্য

Spread the love

গিটহাবের কথা কম্পিউটার প্রোগ্রামারদের অজানা নয়। গিটহাব হলো ওয়েবভিত্তিক একটা রিপোজিটরি সার্ভিস। হোস্টিং সার্ভিসই বলা চলে। সাধারণত অন্যদের সহায়তার জন্য সেখানে প্রোগ্রামাররা তাদের কোড রাখে, ম্যানেজ করে ইত্যাদি। ওখানে নিজের প্রজেক্ট যেমন হোস্ট করা যায় তেমনি যোগ দেওয়া যায় ওপেন সোর্স প্রজেক্টে। গেল ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এখানে এক কোটি বিশ লক্ষ ব্যবহারকারী নিবন্ধিত হয়ে তিন কোটির বেশি কোড রিপোজিটরী রেখেছে। (গিট হাবের বাংলা উইকিপিডিয়া নিবন্ধ নাই!!!)

তবে, এই পোস্টটি গিটহাবের ভালমন্দ নিয়ে নয়। সম্প্রতি  গিটহাবের ৩০ লক্ষ সাবমিশন নিয়ে গবেষণা করেছেন একদল কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তারা দেখেছেন ওপেন সোর্স প্রজেক্টে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের জমা দেওয়া প্রজেক্টের গৃহীত হওয়ার হার বেশি! দেখা যাচ্ছে মেয়েদের লেখা কোড গৃহীত হয়েছে ৭৮.৬% শতাংশ কিন্তু ছেলেদের কোডের বেলায় এই হার ৭৪.৬%!!! তার মানে বোঝা যায়, মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় ভাল কোডিং করে।

না, গবেষণা এখানে শেষ হয়নি। দেখা যাচ্ছে মেয়েরা যদি তাদের লিঙ্গ-পরিচয় প্রকাশ করে তাহলে তাদের কোডকে আর কোডিং দেখে বিবেচনা করা হয় না। কারণ তখন তাদের কোডের গ্রহণযোগ্যতার হার হয় ৬২.৫%!

জেন্ডার বায়াসের ব্যাপারটা তাই প্রায় সব জায়গাতেই দেখা যায়।

এটি হয়তো একটি কারণ আমাদের দেশেও মেয়েদের প্রোগ্রামিং থেকে দূরে থাকার। গতবছর আমাদের সার্ভেতে আমরা দেখেছি কম্পিউটার সায়েন্স ও সংশ্লিষ্ট শাখায় যে ৩৮ হাজার ছেলে-মেয়ে এখন পড়ছে তাদের মধ্যে ৭% শতাংশ গড়ে প্রোগ্রামার হতে চায়। কিন্তু মেয়েদের মধ্যে এ হার ১%-এর কম। এ বিবেচনা থেকে আমরা গতবছর থেকে কিছু উদ্যোগ নিতে শুরু করেছি। তার মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং কনটেস্ট, মেয়েদের জন্য প্রোগ্রামিং কর্মশালা। আগামী মাসে আমরা বিশেষ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা করছি। যার মধ্যে থাকতে পারে-

  • কেবল মেয়েদের জন্য একটি এপ-এ-থন, এপ বানানোর একটা দুদিনের রগড়ানি। যারা এরই মধ্যে বেসিক জানে তাদের জন্য হবে এই আয়োজন। সব ঠিক থাকলে এপবাজার আমাদেরকে সহায়তা করবে এই আয়োজনে।
  • অন্তত একটি প্রোগ্রামিং বিষয়ক বেসিক কর্মশালা এবং একটি কোর্স
  • দেশে ও বিদেশে সফল নারী প্রোগ্রামারদের সঙ্গে আলাপচারিতার সুযোগ
  • দেশের কয়েকটি টেকনোলজি কোম্পানিতে ঘুরতে যাওয়ার সুযোগ

এছাড়া অচিরে শুরু হবে আইসিপিসিকে সামনে রেখে মেয়েদের ২/৩ মাস মেয়াদী প্রোগ্রামিং প্রশিক্ষণ। এই কর্মসূচীর লক্ষ্য হচ্ছে আগামী আইসিপিসিতে মেয়েদের একটি দলকে প্রথম ২০টি দলের মধ্যে নিয়ে আসা। সারাদেশের ১২-১৫টি দলকে নিয়ে এই নিবিড় কর্মসূচী পালিত হবে। এটিও শুরু হবে আগামী মাস থেকে।

বিশ্বের প্রথম প্রোগ্রামার কিন্তু একজন মেয়ে। আর আমাদের মেয়েরাও ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান জায়গায়।

 

বিজ্ঞান, প্রযুক্তি সহ নানান ক্ষেত্রে মেয়েদের পিছিয়ে থাকাকে আসলে মেনে নেওয়া কষ্টকর। বিশ্বব্যাপী তাই সমতার একটা উদ্যোগ চলছে যাতে নিচের ছবিটা বদলানো যায়, যা সিলিকন ভ্যালির চিত্র।

 

আমাদের #মিসিংডটার কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়ার জন্যই আমরা কাজ করি।

সবার জন্য এই বিশ্বকে বাসযোগ্য করা যাক।

শুভ সকাল।

 

 

 

 

 

Leave a Reply Cancel reply

Exit mobile version