আমার সফটএক্সপো ২: ওম্যান টেক কনফারেন্স

Spread the love

এই লেখাটা শুরু হতে পারে আমার অতিসম্প্রতি দেওয়া একটা স্ট্যটাস দিয়ে। একটা জব পোর্টালের হিসাব থেকে দেখা যাচ্ছে ২০১৬ সালে যতো জন চাকরি খুঁজেছে তাদের মধ্যে শতকরা মাত্র ১২ জন মেয়ে। সংখ্যাটা অনেক কিছুই মিন করে। কারণ আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে মেয়েদের সংখ্যা এখন অর্ধেক এবং কোথাও কোথাও বেশিও বটে।
কিন্তু আলোচনাটা যখন হয় বিজ্ঞান প্রযুক্তি দিয়ে তখন দেখা যায় সেখানে মেয়েদের সংখ্যা আশঙ্খাজনকভাবে কম। এমনকী কোয়ালিফিকেশন ও দক্ষতা থাকা স্বত্ত্বেও অনেকে এপ্লাইও করেন না। আইসিটি ক্ষেত্রে ১২% সংখ্যাটা অদ্ভুতভাবে মিলে যায় অন্য একটি সংখ্যার সঙ্গে। সংখ্যাটা বের করেছে বেসিস। বছর খানেক বা তারও আগে একটা বেসিস ওম্যান ফোরামের আবির্ভাব হয়। তাদের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানা যায় বেসিসের সদস্যদের প্রতিষ্ঠানে মেয়েরা মাত্র ১৩%। আর আইটি উদ্যোক্তাদের ক্ষেত্রে এটির সংখ্যা একেবারেই কম মাত্র ৩%।
অনেকেই ইদানীং আমার সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন এই বলে যে, এটি বিশ্বব্যাপী সমস্যা। কাজে এটা বাংলাদেদেশও হবে। এটা নিয়ে ভাবার কারণ নাই। কিন্তু তারা প্রায় সবাই ভুলে যায় যে, গার্মেন্টস-এর মূল শক্তিই কিন্তু মেয়েরা। বিশেষ করে বাংলাদেশে। কাজে তাদের সক্ষমতা নিয়ে দ্বিমতের অবকাশ খুবই কম। ব্যপারটা অনেক বেশি খেয়াল করেছিলেন দেশ গার্মেন্টসের উদ্যোক্তা নুরুল কাদির। শুরু থেকে ওনার উদ্যোগের কারণেই কিন্তু গার্মেন্টস-এর মেয়েদের সংখ্যা বেশি হয়েছে।  উনি যদি মেয়েদের ব্যাপারে রিস্ক না নিতেন, তাহলে এখনকার গল্পগুলো হয়তো অন্যভাবে লিখতে হতো। সোজাসাপ্টা কথা হলো মেয়েদের যদি সুযোগ দেওয়া না হয়, তাহলে তাদের পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি।

অন্যদিকে যেসব জায়গাতে ছেলে বা মেয়ে হিসাব করা হয় না, ঠিক করে বললে প্রার্থীদের চেহারা দেখা যায় না, সেখানে মেয়েরা খুবই ভাল করে। যেমন পাবলিক পরীক্ষা।  কাজে ঝামেলা অন্য জায়গায়, মেয়েদের দক্ষতা বা মেধাতে নয়।

একটা ঝামেলা হলো সমাজের দৃষ্টিভঙ্গি। আমরা যখন ক্যারিয়ার বাছাই-এ তখন শুনতাম মেয়েদের জন্য ভাল পেশা হল “ডাক্তারী বা মাস্টারি”। তবে, এখন ওতো সংকুচিত নয়। আমি যে সব ব্যাংকের শাখাতে যাই সেখানে অনেক মেয়েকে দেখি, সাফল্যের সঙ্গেই কাজ করছেন। ব্যাংক, বীমা, মাল্টিন্যাশনালে আমাদের মেয়েরা তাদের অবস্থান জানান দিতে শুরু করেছে। কাজে আশার আলোতো আছেই।

এখন প্রশ্ন হলো প্রযুক্তি বিশেষ করে মেয়েদের তথ্যপ্রযুক্তিতে এগিয়ে আসতে, চ্যালেঞ্চ মোকাবেলায় ঝামেলাটা কোথায়। বছর দেড়েক আগে বিডিওএসএনের একটা সার্ভেতে আমরা দেখেছিলাম মাত্র ১% মেয়ে, যারা আইসিটি পড়ছে, প্রোগ্রামার হতে চায়। বিশ্বে এই গড়টা অনেক বেশি। তো, এর কারণ কি?

আমরা কয়েকটা খুঁজে পেলাম। একটি হলো তাদের সহপাঠী ছেলেরা তাদেরকে অনুৎসাহিত করে। বলে – প্রোগ্রামিং মেয়েদের জন্য নয়। (কেন বলে এটা নিয়ে কোন স্টাডি নাই)। দ্বিতীয় ব্যাপারটা আমরা লক্ষ করেছি – পিয়ার সাপোর্টের অভাব। ছেলেরা তাদের ১০০ গজের মধ্যে কোন না কোন প্রোগ্রামিং সাপোর্ট পেয়ে যায়। ফলে, আটকা পড়লেও আগাতে পারে। কিন্তু মেয়েদের মধ্যে সংখ্যাটা যেহেতু কম কাজে তাদের খাটনি হয় ডাবল। আর একটা বিষয় আমরা লক্ষ করেছি সেটা হলো তথ্যের প্রাপ্যতা। সেটা নিয়ে আমরা কাজ করছি। আর থার্ড হলো রোল মডেলের অভাব। কোন এক অজ্ঞাত কারণে ছেলেরা কোন কিছুতে ভাল করলে সেটা মেইন স্টোরি হয়, কিন্তু মেয়েদেরটা মেয়েদের পাতাতেই থেকে যায়। এই বিষয়গুলোর সবকিছু নিয়েই কাজ করা যায়। আমাদের সফল মেয়ের সংখ্যা কিন্তু কম নয়, বিশ্বেও নয়। কোড ইট গার্লদের এই ভিডিওতে অনেককেই পাওয়া যাবে।

আবার কেবল এই বিষয় নয়, আরও অনেক বিষয় আছে আলাপ আরোচনা করলে সে দিকগুলো উঠে আসতে পারে। প্রযুক্তিতে মেয়েদের এগিয়ে এখনকার অবস্থান আর তাদের সামনে এগিয়ে যাওয়ার একটা সেশন হবে বেসিসে। সেশনটার শুরুতে আমি আমার দেড়বছরের কাজের আলোকে একটা কিক-অপ প্রেজেন্টেশন দেবো। তারপর প্যানেলিস্টরা বিস্তারিত বলবেন। সেশনটার বিস্তারিত নিম্নরূপ : –

ওম্যান টেক কনফারেন্স
ভ্যেনু : আগারগাঁও বিআইসিসি
তারিখ : ১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ বুধবার
হল : মিডিয়া বাজার, নীচতলা, ঢোকার পর হাতের ডানপাশে
সময় : বেলা ৩টা থেকে ৫টা।

 

আগ্রহীদের নিবন্ধন করতে হবে। আগ্রহীরা এই লিংক  থেকে নিবন্ধন করে কনফারেন্সে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। অনুষ্ঠানস্থল থেকেও নিবন্ধন করে কার্ড নিয়ে প্রবেশ করা যাবে। তবে অনলাইন নিবন্ধন করলে সময় অনেক কম লাগবে কার্ড নেওয়ার ক্ষেত্রে।

আগ্রহীদের আমন্ত্রণ।

 

Leave a Reply Cancel reply